বর্তমান সময়ে তথ্য সংরক্ষণ এবং তথ্য স্থানান্তরের একটি নির্ভরযোগ্য এবং সিকিউর মাধ্যম হচ্ছে এই ব্লকচেইন। ব্লকচেইন সিকিউর হবার মূল কারণ হচ্ছে এটি decentralized অর্থাৎ একটি তথ্যর কর্তৃত্বে একজন থাকে না, সকলের কাছেই তার কর্তৃত্ব থাকে। হয়তোব কিছুই বোঝতে পারছেন না। চলুন এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
ব্লকচেইন কি? (What Is Blockchain)
ব্লকচেইন হচ্ছে এই পর্যন্ত আবিষ্কার হওয়া সব থেকে কার্যকরী এবং নিরাপদ তথ্য সংরক্ষণের পদ্ধতি। এখন তথ্য তো অনেক ভাবেই সংরক্ষণ করা যেতে পারে। যেমন আপনি একটি কাগজে কোন একটি তথ্য লিখে রাখলেন, তাহলে এটিও একটি তথ্য সংরক্ষণের পদ্ধতি। আবার আপনি মাইক্রোসফট এক্সেলে তথ্য সংরক্ষণ করতে পারেন।
এখানে খেয়াল করার বিষয় হচ্ছে যে, মাইক্রোসফট এক্সেলে যখন আপনি একটি তথ্য সংরক্ষণ করবেন তখন সেই তথ্যটি টেবিল আকারে সংরক্ষিত থাকবে। তেমনি ভাবে ব্লকচেইনের তথ্য ব্লক হিসেবে সংরক্ষিত থাকে। একটি ব্লক তিনটি জিনিসের সমন্বয়ে তৈরি হয়ে থাকে।
প্রথম হচ্ছে একটি ডাটা বা তথ্য। যেমন প্রেরক প্রাপক বা পরিমাণ ইত্যাদি। দ্বিতীয় জিনিসটি হচ্ছে একটি হ্যাস (Hash) যেটি একটি ব্লকের ফিঙ্গারপ্রিন্ট। অর্থাৎ এই হ্যাস (Hash) এর মাধ্যমে প্রত্যকটি ব্লককে আলাদা আলাদা ভাবে চিহ্নিত করা যায়। প্রত্যকটি ব্লকেরই নিজেদের একটি ইউনিজ হ্যাস থাকে।
তৃতীয় হচ্ছে প্রত্যকটি ব্লক তার পূর্ববর্তী ব্লকের হ্যাস নিজরে মধ্যে স্টোর করে রাখে। অর্থাৎ একটি ব্লকের মধ্যে তিনটি জিনিস থাকে, যা হচ্ছে ডাটা, হ্যাস এবং পূর্ববর্তী ব্লকের হ্যাস।
ব্লকচেইন সাধারণ P2P কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ম্যানেজ করা হয়। এখন এই P2P বলতে বোঝানে হচ্ছে যে এমন একটি নেটওয়ার্ক যেখানে একটি নোড(Node) অপর আরেকটি নোড(Node)-এর সাথে সংযুক্ত থাকে।
ব্লকচেইনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস (History of Blockchain)
ক্রিপ্টোগ্রাফার ডেভিড চাউম তার ১৯৮২ সালের গবেষণামূলক প্রবন্ধে প্রথম একটি ব্লকচেইনের মতো প্রোটোকল প্রস্তাব করেছিলেন। ১৯৯১ সালে স্টুয়ার্ট হ্যাবার এবং ডব্লিউ স্কট স্টর্নেট দ্বারা ক্রিপ্টোগ্রাফিকভাবে সুরক্ষিত ব্লকের চেইন নিয়ে আরও কাজ বর্ণনা করা হয়েছিল। তারা এমন একটি সিস্টেম বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিল যেখানে নথির টাইমস্ট্যাম্পগুলিকে টেম্পার করা যাবে না।
এরপর এই ব্লকচেইন নিয়ে অনেক গবেষণা এবং কাজ হলেও মূল কাজটি হয় ২০০৮ সালে। কেননা ২০০৮ সালে প্রথম Satoshi Nakamoto নামে একজন অজানা ব্যক্তি (বা একটি দল) ব্লকচেইনের মাধ্যমে বিটকয়েন ডেভেলাপ করে। যা প্রযুক্তি জগৎ-এ একটি নতুন দিগন্ত খুলে দেয়। আর এরপর এই ব্লকচেইন ডেভেলাপ হতে হতে আজ ২০২২ সালে বর্তমান পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়িয়েছে।
ব্লকচেইনের প্রযুক্তির সুবিধা
ব্লকচেইনের মূল সুবিধা হচ্ছে যে, মনে করুন আপনি একটি ব্লকের তথ্য বা ডাটা পরিবর্তন করতে চাচ্ছেন, তখন উক্ত ব্লকের হ্যাসও(Hash) পরিবর্তন হয়ে যাবে। আর উক্ত ব্লকের হ্যাস পরিবর্তন হয়ে গেলে এর পরবর্তি ব্লকেরও হ্যাস পরিবর্তন হয়ে যাবে। আর পরবর্তি ব্লকের হ্যাস পরিবর্তন হয়ে গেলে এর পরবর্তি ব্লকেরও হ্যাস পরিবর্তন হয়ে যাবে এবং এমন ভাবে চলতেই থাকবে। আর এর ফলে পুলো ব্লকচেইনটিই খারাপ হয়ে যাবে।
এর ফলেই ব্লকচেইন এতো সুবিধাজনক একটি মাধ্যম, কেননা একটি ব্লকচেইনকে পরিবর্তন করা এক কথায় অসম্ভব। কেননা একবার একটি ব্লক একটি ব্লকচেইনের সাথে সংযুক্ত হয়ে গেলে তারপর সেটাকে আর পরিবর্তন করা সম্ভব না।
আর ব্লকচেইনের আরেকটি সুবিধা হচ্ছে যে, কোন একজন কর্তৃপক্ষ দ্বারা ব্লকচেইন নিয়ন্ত্রিত হয়না। একটি ব্লকচেইনের নেটওয়ার্কে অংশগ্রহণকারী প্রত্যকটি কম্পিউটার বা নোড দ্বারা ব্লকচেইনটি নিয়ন্ত্রীত হয়ে থাকে। যার ফলে কোন পরিবর্তন হলে বা যেই কোন কিছু হলে সেটি সবগুলো নোডের (কমপক্ষে ৫১% নোডের) অনুমতির মাধ্যমে হয়ে থাকে।
ব্লকচেইন প্রযুক্তির অসুবিধা
সবকিছুরই যেমন একটি ভাল দিক আছে তেমনি সবকিছুর একটি খারাপ দিকও আছে। ব্লকচেইনেরও তেমনি ভাবে একটি খারাপ দিক আছে। ব্লকচেইন অতিরিক্ত শক্তি ব্যবহার করে এবং এটি একটি বিশালভাবে বিতরণ করা কম্পিউটিং সিস্টেম নয়।
ব্লকচেইনের একটি মূল সমস্যা হচ্ছে এটি অপরিবর্তনশীল এবং এটি অবিনাশী। তাছাড়া ব্লকচেইন একটি ব্যবয়বহুল প্রযুক্তি। মূল বিষয় হচ্ছে এই টেকনোলজিটি সচরাচর ব্যবহারের খাতে আসার জন্য আরো সময় দরকার।
ব্লকচেইনের ব্যবহার
বাস্তব জগৎ-এ ব্লকচেইনের সব থেকে বড় ব্যবহার হচ্ছে ক্রিপ্টোকারেন্সির মধ্যে। বিটকয়েনের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সি পুরোপুরি ব্লকচেইনের উপর নির্ভরশীল।
তাছাড়া, আপনি যদি একটি ভিন্ন রকম উদাহরণের কথা শুনতে চান তাহলে চলুন বলি আপনাকে। বর্তমান সময়ে কিন্তু সার্টিফিকেট নকল করা অনেকটা সহজ হয়েগেছে। কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং না পড়েই ইঞ্জিনিয়ার হয়ে যাচ্ছে আবার কেউ ডাক্তারি না পড়েই ডাক্তার হয়ে যাচ্ছে। কারণ নকল সার্টিফিকেট বানানো এখন অনেকটাই সহজ হয়েগেছে। তবে মনে করুন শিক্ষা মন্ত্রণালয় দ্বারা সকল সার্টিফিকেট ব্লকচেইনের মাধ্যমে অনলাইনে স্টোর করে রাখা হলো তখন কিন্তু কেউ চাইলেই আর নকল সার্টিফিকেট বানাতে পারবে না। কেননা আমরা জানি যে, ব্লকচেইন পরিবর্তন করা অসম্ভব। তেমনি সকল ক্ষেত্রে যদি ব্লকচেইনের ব্যবহার বৃদ্ধি পেতে থাকে তাহলে জালিয়াতির মতো কাজগুলো অনেকটাই কমে যাবে। আর এই রকম উদ্যোগ আমাদের দেশ সহ অন্যান্য দেশে ইতিমধ্যে নেয়া শুরু হয়ে গেছে।
এইতো গেল কাল্পনিক উদাহরণ। চলুন দেখে নেয়া যাক বাস্ত জগৎ-এ বর্তমানে ব্লকচেইন ব্যবহার হওয়া কিছু বাস্তব উদাহরণ।
- অর্থ স্থানান্তর
ব্লকচেইনের মাধ্যমে তথ্য স্থানান্তর করা অনেক সিকিউর এবং কম ব্যয়বহুল। তাছাড়া, ব্লকচেইনের মাধ্যমে তথ্য অনেক দ্রুত স্থানান্তর করা যায়, যা ব্লকচেইনের সবচেয়ে ভাল একটি দিক। অর্থাৎ ব্লকচেইনের মাধ্যমে অর্থ সবথেকে দ্রুত ট্রান্সফার করা যাবে।
- এনএফটি
যেহেতু ব্লকচেইন ডাটা পরিবর্তনে বাধা দেয়, তাই ব্লকচেইনে একটি NFT স্থাপন করা গ্যারান্টি দেয় যে, ডিজিটাল শিল্পের একটি অংশের শুধুমাত্র একটি কপি বিদ্যমান। আর NFT মানেই যেহেতু সেটি ইউনিক হবে, সেই কারণে এনএফটির ক্ষেত্রে ব্লকচেইনের গুরুত্ব অপরিসীম।
- IoT
ইন্টারনেট অফ থিংস (IoT) আমাদের জীবনকে আরও সহজ করে তুলছে, তবে এটি হ্যাকারদের জন্য আমাদের ডেটা অ্যাক্সেস করার বা গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দরজাও খুলে দিচ্ছে। এবং এই ক্ষেত্রে ব্লকচেইন টেকনোলজি ব্যবহারে মাধ্যমে আমাদের পাসওয়ার্ড এবং অন্যান্য তথ্য সিকিউরলি সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
- ভোট
যদি ব্যক্তিগত পরিচয়ের তথ্য ব্লকচেইনে রাখা হয়, তাহলে তা আমাদের ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভোট দিতে সক্ষম হওয়ার থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে রাখে। ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিশ্চিত করা যায় যে কেউ দুবার ভোট দেয়নি, এবং এর মাধ্যমে শুধুমাত্র যোগ্য ভোটাররা ভোট দিতে সক্ষম হবে। আর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভোটের সাথে কারচুপি করা যাবে না।
এমন অনেক প্রযুক্তি আছে যেগুলো ব্লকচেইন টেকনোলজি ব্যবহার করছে এবং ভবিষ্যৎ এর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
Public এবং Private Blockchain -এর মধ্যে পার্থক্য কি?
ব্লকচেইন মূলত দুই প্রকার একটি হচ্ছে Public Blockchain এবং আরেকটি হচ্ছে Private Blockchain। একটি Public Blockchain হচ্ছে একটি ওপেন নেটওয়ার্ক। এই নেটওয়ার্কে যে কেউ চাইলেই জয়েন হতে পারে এবং উক্ত ব্লকচেইনের নেটওয়ার্কে থাকা অন্যান্য ডিভাইজের ন্যায় ক্ষমতার অধিকারী হয়ে থাকে। পাবলিক ব্লকচেইনের উদাহরণ হল বিটকয়েন এবং ইথেরিয়াম, সাধারণত একে নিরাপদ ব্লকচেইন বলা হয়।
অপরদিকে একটি Private Blockchain একটি নেটওয়ার্ক অ্যাডমিনিস্ট্রেটর দ্বারা পরিচালিত হয় এবং অংশগ্রহণকারীদের নেটওয়ার্কে যোগদানের জন্য সম্মতি প্রয়োজন অর্থাৎ, একটি প্রাইভেট ব্লকচেইন হল একটি অনুমোদিত ব্লকচেইন। Private Blockchain-এর উদাহরণ হল Ripple এবং Hyper Ledger, সাধারণত এই ব্লকচেইনকে কম নিরাপদ বলে মনে করা হয়।
Public Blockchain এর কিছু সুবিধা:
- High Security
- Open Environment
- Full Transparency
- No Regulations
- Full User Empowerment
Private Blockchain এর কিছু সুবিধা:
- Full Privacy
- High Efficiency
- Better Scalability
ব্লকচেইন সম্পর্কে কিছু মজার ফেক্ট
চলুন ব্লকচেইন সম্পর্কে কিছু মজার ফেক্ট জেনে নেয়া যাক।
- ব্লকচেইন বিনিয়োগ ব্যাঙ্কের অবকাঠামোগত খরচ ৩০% কমাতে পারে
- বিশ্বের মোট জনসংখ্যার মাত্র ০.৫ শতাংশ এখন ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে
- ২০টিরও বেশি দেশ সক্রিয়ভাবে ব্লকচেইন নিয়ে গবেষণা করেছে
- ক্রমবর্ধমান সংখ্যক খাদ্য কোম্পানি এবং খুচরা বিক্রেতারা ব্লকচেইন প্রযুক্তি নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে, যা একটি অবকা করার বিষয়
- ব্লকচেইন লেনদেনে ২৭০ বিলিয়ন ডলারের বেশি সম্পদ বিতরণ করা হয়েছে
- এমন সামাজিক নেটওয়ার্কও রয়েছে যা ব্লকচেইন টেকনোলজির উপর নির্ভর করে চলে
- IBM-এর প্রায় ১৫০০ কর্মী রয়েছে যারা ৫০০ টিরও বেশি ব্লকচেইন প্রকল্পে কাজ করছে
- বিশ্বের কয়েকটি বৃহত্তম ব্যাংক ব্লকচেইন-ভিত্তিক ডিজিটাল নগদ নিষ্পত্তি ব্যবস্থা তৈরি করতে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে
ব্লকচেইন সাথে সম্পর্কিত প্রযুক্তির নাম কী?
ব্লকচেইন টেকনোলজির পিছনে সর্বমোট তিনটি টেকনোলজি কাজ করে। সেগুলো হল:
১. Private Key Cryptography
২. P2P Network (Peer-2-Peer)
৩. Program (the blockchain’s protocol)
১০ টি ব্লকচেইন অ্যাপ্লিকেশনের নাম
ব্লকচেইন কি, এর সুবিধা-অসুবিধা এবং বাস্ত জগৎ-এ এর ব্যবহার সম্পর্কে তো জানলাম। তবে ব্লকচেইন ব্যবহার করছে এমন কয়েকটি অ্যাপ্লিকেশন সম্পর্কে তো এখনও জানা হলো না। চলুন সেটিও জেনে নেয়া যাক।
- Chainalysis
- Circle
- Algorand
- Chain.io
- Dfinity
- BurstIQ
- Mediachain
- Propy Inc
- HYPR
- Xage Security
ব্লকচেইন কতটা নিরাপদ?
এইবার হয়তোবা আমরা মূল বিষয়ে এসেছি। এইযে এতো কথা হচ্ছে এই ব্লকচেইন নিয়ে, আসলে কি ব্লকচেইন হ্যাক করা অসম্ভ। বা এইযে সবাই বলছে এই ব্লকচেইন অনেক সিকিউর এইটা কতটা যৌক্তিক। চলুন এই বিষয়টিও জেনে নেয়া যাক।
মনে করুন একটি ব্লকচেইনের একটি নতুন ব্লক তৈরি করা হলা যেটি বলছে A হতে তথ্য বা অর্থ B তে ট্রান্সফার করার জন্য। এখন উক্ত ব্লকচেইনের নেটওয়ার্কে থাকা সকল কম্পিউটার এই ব্লকটিকে ভেরিফায় করবে। এখন সকল কম্পিউটার ভেরিফায় করবার পর বলল যে, হ্যাঁ A হতে তথ্য বা অর্থ B তে যাবে। কিন্তু, নেটওয়ার্কে থাকা একটি কম্পিউটার (হ্যাকারের কম্পিউটার) বলর যে, না A হতে B তে নয়, তথ্য বা অর্থ যাবে A হতে C তে (অথবা A হতে হ্যাকারের সিস্টেমে)। এখন নেটওয়ার্কে থাকা বাকি কম্পিউটারগুলো বলবে যে, না তথ্য বা অর্থ A হতে B তেই যাবে, কারণ উক্ত ব্লকে তাই বলা আছে। তখন কিন্তু তথ্য বা অর্থ A হতে B তেই যাবে।
আর এই জন্য বলা হয়ে থাকে যে ব্লকচেইন অনেক সিকিউর একটি সিস্টেম। তবে যদি একটি নেটওয়ার্কের ৫১ শতাংশ কম্পিউটার বলে যে, তথ্য বা অর্থ A হতে C তে যাবে তাহলে কিন্তু A হতে C তেই যাবে। তবে এর জন্য হ্যাকারকে ৫১ শতাংশ কম্পিউটারের এক্সেস নিতে হবে। আর যদি একটি নেটওয়ার্ক বিশাল বড় হয় তাহলে এই কাজটি করা এক কথায় অসম্ভব। যেমন ধরুন বিটকয়েনের ব্লকচেইনের ক্ষেত্রে এই কাজটি করা একদমই অসম্ভব। কেননা বর্তমানে বিটকয়েনের ব্লকচেইন নেটওয়ার্ক অনেক বড়। পুরো বিশ্বে হাজার হাজার কম্পিউটার এই নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত। যার ফলে কোন হ্যাকারের পক্ষেই ৫১ শতাংশ কম্পিউটারের এক্সেস নেওয়া সম্ভব না।
মাইনিং
এই মাইনিং কনসেপ্টটি যদি আপনি না বোঝেন তাহলে এর মানে আপনি ব্লকচেইনের কনসেপ্টটিই বোঝেন নাই। এখন দেখেন যে, একটি ব্লকচেইনের নেটওয়ার্কের সাথে যত বেশি কম্পিউটার কানেক্টেড থাকবে সেই নেটওয়ার্কটির ক্ষমতাও ততো বাড়বে। কিন্তু, একজন কেন তার কম্পিউটারকে একটি ব্লকচেইনের নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করে রাখবে? আর এই প্রশ্নে উত্তর পাওয়ার জন্য আপনাকে মাইনিং-এর বিষয়টি বোঝতে হবে।
এখন চিন্তু করুন যে আপনি আপনার কম্পিউটারকে একটি ব্লকচেইন নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করে দিলেন। আর আপনার কম্পিউটার ভেরিফাই করছে যে একটি ব্লক ঠিক আছে কিনা। একেই মাইনিং বলে, কিন্তু মাইনিং করে আপনার লাভ কি? আপনারতো উল্টো খরচ হচ্ছে। আসলে মাইনিং করলে এর বিপরীতে আপনি কিছু বিটকয়েন পাবেন। আর এটাই মাইনিং-এর সুবিধা।
শেষ কথা
আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে ব্লকচেইন সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। যদি এরপরও আপনার মনে কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে আমাদেরকে সেটি জানাতে পারেন।